ArabicBengaliEnglishHindi
scriptForHost

ভবঘুরে নাম ঘুচিয়ে নিজের পায়ে দাড়ালো ০৬ নারী


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২, ২০২২, ৭:০০ অপরাহ্ন / ২২
ভবঘুরে নাম ঘুচিয়ে নিজের পায়ে দাড়ালো ০৬ নারী

কালিয়াকৈর(গাজীপুর) প্রতিনিধি ->>
সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, কাশিমপুর, গাজীপুর এর ০৬ জন ভবঘুরে ও নিরাশ্রয়ী নারীকে গার্মেন্টসে চাকুরীর মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপনে পূর্ণবাসন করা হয়।

 

মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক সাহায্যের আবেদন

 

তারা হলেন মোছাঃ রুবি বেগম( ৩১), প্রিয়া (১৮), সালমা (১৮), রুপালী( ১৮), মিনা( ১৮), শারমিন (১৯)। এদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন ভাবে পরিবার থেকে বিছিন্ন হয়ে ঠাই হয় সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র কাশিমপুর, গাজীপুর। গত ০৮/০৪/২০২২ ইং গাজীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মো আনোয়ারুল করিম ০১ মাসের খোরাকি সহ প্রত্যেকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয়।

আশ্রয় কেন্দ্র টির উপসহকারী পরিচালক কাজী হাফিজুল ইসলাম জানান,১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পযন্ত বিভিন্ন সময় চাকুরী, বিবাহ, ঋণ ও অনুদানের মাধ্যমে ৩৪৮৫ জন ভবঘুরে নারীকে পূন বার্সন করা হয়েছে।

রুবি : মাএ ১২ বছর বয়সে পরিবারের অমতে একটি ছেলের সাথে রুবির বিয়ে হয়। পরবর্তিতে ২০০৩ সালে স্বামী তাকে ফেলে আরেক বিয়ে করলে রুবির জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। স্বামী সন্তানহীন রুবি প্রথম কিছুদিন গৃহ কর্মী হিসাবে কাজ করেন। একদিন উদ্দেশ্য হীন ভাবে ঘোরাঘুরি অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং পরবতীতে ঠাই হয় সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র গোদনাইল, নারায়ণগঞ্জ। সেখান থেকে ২০১২ সালে তাকে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, কাশিমপুর, গাজীপুরের নিবাসী হিসাবে স্থানান্তরিত করা হয়। এখানে আসার পর রুবি জানায়, পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে।

রুবির পারিবারিক ঠিকানায় একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও পরিবার তাকে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানান। এভাবে ১০ বছর কেটে যায় আশ্রয় কেন্দ্রের নিবাসী হিসাবে।এ সময় রুবি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, কাশিমপুর, গাজীপুর থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল গামের্ন্টস ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহন করে।গত ০৮/০৪/২০২২ ইং তারিখে নিকটস্থ রিভার ব্রাদার্স নীর্টওয়্যার লিঃ এ রুবির রুবির চাকুরির ব্যবস্থা করা হয়।গত চার মাস যাবত রুবি সফল ভাবে চাকুরী করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।রুবির সাথে যোগাযোগ করা হলে জানায়,সে এখন খুবই ভাল আছে।তার কমস্থলের পাসেই একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে।

প্রিয়ারীঃপ্রিয়া আক্তার প্রিয়ারী মাত্র ১৫ বছর বয়সে মনিপুর বাসা বাড়ি এলাকায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে রাস্তায় ঘোরাফেরা করা অবস্থায় পুলিশ কর্তৃক আটক হয়ে প্রথমে আশ্রয় হয় সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, মিরপুর ঢাকায় , সেখান থেকে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র কাশিমপুর গাজীপুরে বছরে বদলি করে পাঠানো হয়, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র কাশিমপুর, গাজীপুর।

মানসিক প্রতিবন্ধি প্রিয়ারি আশ্রয় কেন্দ্র কাশিমপুর, গাজীপুরে চিকিৎসা ও পরিচর্যা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে এবং তার অতীতের স্মৃতি মনে করতে সক্ষম হয়। সে জানায় তারা তিন ভাই দুই বোন, পিতা কৃষিকাজ করে সে তার চাচাতো বোন উর্মির সাথে কাজের সন্ধানে ঢাকায় মগবাজারে আসে। সেখানে আসার কিছু দিন পর থেকে তাঁর মানসিক সমস্যা শুরু হয়। প্রথম প্রথম পরিবারের কাছে ফেরত যেতে চাইলেও পরিবর্তে আশ্রয় কেন্দ্র অন্যান্য মেয়েদের মত চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। বর্তমানে সে রিভার ব্রাদার্স নিটওয়্যার লিমিটেড এ পেশাক কর্মী হিসেবে চাকরি করছে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, সে তার মাকে তার কাছে নিয়ে আসবে এবং পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করবে।

রুবি প্রিয়ার মত এখানকার বাকি সবারই গল্প প্রায় একই রকম। বর্তমানে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, কাশিমপুর , গাজীপুরে ১৮০জন ভবঘুরে নারীকে আশ্রয় হয়েছে । সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে জীবনের আশার আলো দেখিয়েছে সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে জীবনে আশার আলো দেখিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরধীন সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র কাশিমপুর, গাজীপুর।